নিজেদের ডেরায় অস্ট্রেলিয়াবধের পর নিউ জিল্যান্ড সিরিজও স্বপ্নের মতো কাটছে লাল সবুজের বাংলাদেশের। কিউইদের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখে নিশ্চিত করে ফেলেছে সিরিজ। এবার পাখির চোখ মরুর বুকের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ-২০২১ এ। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বৈশ্বিক আসরটি শুরু হওয়ার ঠিক মাস খানেক আগে এই সংস্করণে এমন জয় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ চললেও আলোচনায় এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল।

কান পাতলেই শোনা যায় বিশ্বকাপ দল নিয়ে নানা কাটাছেড়া। কে থাকছেন আর কে থাকছেন না; বাঘা বাঘা দলগুলোর সঙ্গে লড়তে কাদের নিয়েই-বা যাবে বাংলাদেশ। তার আগেই তামিম ইকবাল বিশ্বকাপ দল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে আলোচনা তাঁতিয়ে তুলেছেন। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার ডেডলাইন শেষ হয়ে এলো বলে। অবশেষে আসছে সেই মহেন্দ্রক্ষণ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানিয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দল ঘোষণার সময়। আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করবে ক্রিকেট বোর্ড। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল কেমন হতে পারে? রাইজিংবিডির পাঠকদের সেই আলোচনাই করা হবে এই প্রতিবেদনে। কারা পাচ্ছেন বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ।

তার আগে একটু বলে রাখি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আভাস দিয়ে রেখেছেন আগেই; নিউ জিল্যান্ড সিরিজের স্কোয়াড থেকেই বাছাই করা হবে বিশ্বকাপ দল। তার মানে ঘুরে ফিরে কিউইদের বিপক্ষে দলে থাকা ক্রিকেটারাই টিকিট কাটবেন ওমান-দুবাইয়ের। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে কেমন হতে পারে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড? ওপেনার হিসেবে লিটন দাস-মোহাম্মদ নাঈম শেখের জায়গা একেবারে নিশ্চিত বলা যায়। এই দুজনের সঙ্গে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে সৌম্য সরকার যে থাকবেন তা অনুমেয়। ওপেনারের পরেই আসেন তিন নম্বর পজিশন। এই পজিশনে যারাই ব্যাট করেন তাদের প্রায়ই রাখতে হয় ওপেনারের ভূমিকা। খেলতে হয় নতুন বলে। এতে সাকিব আল হাসানের নাম অবধারিত। চার নাম্বার পজিশনে আছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম।

আর পাঁচ নাম্বার পজিশনে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার পরেই তরুণ তুর্কী আফিফ হোসেন ধ্রুব। ওপেনিংয়ে লিটন-নাঈম-সৌম্যর মধ্যে প্রতিযোগিতা হলেও তিন থেকে ছয় এই চার পজিশনে সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ-আফিফ এক প্রকার নিশ্চিত। টি-টোয়েন্টিতে উইকেট কিপিং করবেন না মুশফিক। তাই নুরুল হাসান সোহানের জায়গা পাওয়াও এক প্রকার নিশ্চিত। সাত নম্বর পজিশনে ব্যাট হাতে দেখা যেতে পারে সোহানকে। আর সোহান যদি স্কোয়াডে থাকেন আবার ব্যাট হাতে অফ ফর্মের কারণে একাদশে সুযোগ না পান তাহলে লিটন দাসতো আছেনই। আর এই পজিশনে দেখা যেতে পারে শামীম হোসেনকে। যিনি জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে আছেন।

বিশ্বকাপ দলে শামীমের জায়গাও নিশ্চিত বলা যায়। অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিব ছাড়া দলে জায়গা নিতে পারেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন-শেখ মেহেদী হাসান। বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে নাসুম আহমেদ-আমিনুল ইসলাম বিপ্লব দলে জায়গা করে নিতে পারেন। তবে বিপ্লব-মেহেদীর মধ্যে লড়াই হতে পারে; তাদের মধ্যে জায়গা পেতে পারেন যেকোনো একজন। পেসে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গী হিসেবে তাসকিন আহমেদ-শরিফুল ইসলামের জায়গা প্রায় নিশ্চিত। বিপ্লব-মেহেদীর মধ্যে যে জায়গা পাবেন না তাকে দেখা যেতে পারে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে। স্ট্যান্ডবাইতে আরও থাকতে পারেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার সঙ্গে থাকতে পারেন পেসার রুবেল হোসেন। নিউ জিল্যান্ড সিরিজে আছেন তার মধ্যে থেকে বাদ পড়তে পারেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সম্ভাব্য স্কোয়াড: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, নাঈম শেখ, আফিফ হোসেন, কাজী নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, সাইফ উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও নাসুম আহমেদ। স্ট্যান্ডবাই: শেখ মেহেদি হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রুবেল হোসেন।